দেশের অভ্যন্তরে এখন সক্রিয় মোবাইল ফোন সংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি ৪১ লাখ। এবং পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতিবছরই দেশে প্রায় দুই কোটি মোবাইল ফোন সংযোজন হচ্ছে। এ তালিকায় প্রতিবছর দেশে আমদানি করে আনা মোবাইল ফোনের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। দীর্ঘদিন ধরে দফায় দফায় দেশের অভ্যন্তরে থাকা আনঅফিশিয়াল হ্যান্ডসেট বা দেশের বাহির থেকে কিনে আনা ফোন বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে নানা গুঞ্জন ও বিভিন্ন প্রক্রিয়ার বিষয়ে শোনা যায়।
বিদেশ থেকে আসা বা আনঅফিশিয়াল স্মার্টফোন ক্রেতাদের ফোনে দেশীয় কোন মোবাইল ফোন অপারেটরের নেটওয়ার্ক না পাওয়া নিয়ে এক প্রকার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় বিটিআরসি গত ১লা অক্টোবর হতে দেশীয় মোবাইল ফোন অপারেটরদের নেটওয়ার্কে নতুনভাবে সংযুক্ত সকল অবৈধ হ্যান্ডসেটের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছিল।
কিন্তু সম্প্রতি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার নিশ্চিত করেছেন বৈধ-অবৈধ হ্যান্ডসেট নিয়ে গ্রাহকদের দুশ্চিন্তা নেই, দেশের মোবাইল অপারেটরদের নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হলেই চলবে সব হ্যান্ডসেট। ফলশ্রুতিতে যেকোন গ্রাহকের মোবাইল ফোনটি বৈধ না অবৈধ, নেটওয়ার্কে চলবে কি চলবে না! এসব নিয়ে আর কোন শঙ্কা থাকছে না।
এখন থেকে দেশের মোবাইল নেটওয়ার্কে অন্তর্ভুক্ত হলেই চলবে সব হ্যান্ডসেট, বন্ধ হচ্ছে না কোনটিই। বিটিআরসির ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টারে (এনইআইআর) সব হ্যান্ডসেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধন হয়ে যাবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিটিআরসিকে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে বলেছে। ইতোমধ্যে বিটিআরসি তা কার্যকরের উদ্যোগ নিয়েছে।
যদিও এর আগে ১লা অক্টোবর হতে বিটিআরসি অবৈধ হ্যান্ডসেটের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিষয়ে চূড়ান্ত নোটিশ দিয়েছিলো এবং সে অনুযায়ী অনেক অবৈধ ফোন তারা ইতোমধ্যে মোবাইল নেটোয়ার্কে সংযুক্ত হওয়া থেকে বিচ্ছিন্ন রেখেছে। এই প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়েই ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বৃহস্পতিবার জানান,
ডিজিটাল বাংলাদেশে প্রযুক্তি ডিভাইস ব্যবহারে জনগণের কোনো ভোগান্তি হতে দেয়া যায় না। দেশের মোবাইল নেটওয়ার্কে কোনো হ্যান্ডসেট চালু হলে তা বন্ধ করে দেয়া হবে না। বিটিআরসির কাজ ছিলো দেশে সচল সব হ্যান্ডসেটের বিস্তারিত ডেটাবেইজ রাখা, সেটা সফলভাবে করা হচ্ছে। দেশের বাইরে হতে কেনো হ্যান্ডসেট এলে সেটি হতে ভ্যাট-ট্যাক্স আদায়ের কাজটি এনবিআরের। এনবিআর চাইলে বিটিআরসি ভ্যাট-ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে আনা হ্যান্ডসেটের তালিকা দিয়ে দেবে।
দেশের অভ্যন্তরে থাকা বর্তমানে অধিকাংশ আনঅফিশিয়াল ফোনই রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আনার ফলে এবং সকল ফোনের ব্যাপারে একটা ডেটাবেইজ সংরক্ষণের উদ্দেশ্য থেকেই সরকারের পক্ষ থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও, সেটা নিয়ে জল ঘোলা করা হচ্ছিলো বারংবার। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগ উপবিভাগ ও দপ্তরের মধ্যে সমন্বয়হীনতার জন্য গ্রাহকদের বিভিন্ন সময়ে এরকম বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, যেকোন হ্যান্ডসেট কীভাবে এসেছে সে বিষয়ে জানার বা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন মনে করলে এনবিআর এবং আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী দেখতে পারে। বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও নিশ্চিত করেছেন বৈধ-অবৈধ কোনো হ্যান্ডসেটই বন্ধ হচ্ছে না দেশের নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হওয়ার পর
তিনি আরো নিশ্চিত করেন ইতোমধ্যে সকল গ্রাহককে এ বিষয়ে ম্যাসেজ দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এবিং শীঘ্রই এ বিষয়ে জানানো হবে। উল্লেখ্য বিটিআরসি চলতি বছরের ১লা জুলাই থেকে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছিলো ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) এর কার্যক্রম।
যেখানে বৈধ কিংবা অবৈধ- গ্রাহকের হাতে মোবাইল নেটওয়ার্কে সচল থাকা সকল হ্যান্ডসেট ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিটিআরসির ‘নক অটোমেশন অ্যান্ড আইএমইআই ডেটাবেইজ (এনএআইডি)’ সিস্টেমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিন করা হয়। আর সে সময়ে নিবন্ধিত হওয়া ওসব হ্যান্ডসেটের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হচ্ছে না বলে জানানো হয়। এবং বর্তমানে গৃহীত এই নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো হ্যান্ডসেটেরই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হচ্ছে না আর।
#BTRC #NEIR #UnofficialPhone #Smartphone #HandsetRegistration #TechNews