Header Ads

টি-টোয়েন্টির অ্যাগ্রেশান আর মাইন্ডসেট কোথায় বাংলাদেশি ব্যাটারদের!

টি-টুয়েন্টির অ্যাগ্রেশান আর মাইন্ডসেট কেনো আজো বাংলাদেশের ব্যাটস্‌ম্যানদের মধ্যে নেই!
Photo Credit: ICC Official Page

আচ্ছা লিটন দাসের টুক-টুক করে খোঁচা-খাচি মারা, ভয়ে ভয়ে ব্যাট চালানো, সৌম্য'র হরহামেশা বাউন্ডারিতে ক্যাচ তুলে দেয়া, এছাড়াও অনেকেরই শট্‌ দেখলে মনে হয় যেনো অনেক কষ্ট করে অতটুকু পার করতে হইছে বল! শটে অ্যাকুরেচির কি যে এক বেসামাল হাল!

এই হতাশাব্যঞ্জক দৃশ্যপটগুলোতে একটা বিষয় খুবই কমন থাকে, আমাদের দেশের প্লেয়ারদের অ্যাগ্রেশন, কনফিডেন্স লেভেল, বডি ল্যাংগুয়েজ, ফুট ওয়ার্ক, ডিফেন্স সবকিছুই যেনো নিখাদ তলানিতে। আমি সবার বিষয়ে বলছিনা, তবে ফরম্যাটের ভিন্নতায় প্লেয়ারদের আচরণে তেমন কোন ভিন্নতা যেনো খুঁটে খুঁটে বের করাও দায় এ বাংলাদেশ দল থেকে!

স্কটল্যান্ডের সাথে ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিং দেখে আপনাদের মনে হয়েছিল কী এতো পুরনো একটা দল হিসেবে সময়ের বিবেচনায় তাদের অ্যাটিটিউডে পরিপক্কতা পেয়েছে?
ওমানের সাথে ১০১ রানে সাকিবের বিদায়ে ৩য় উইকেট যায়। বাকি ৫২ রান তুলতে গিয়ে বাংলাদেশের ৭ উইকেট নেই! ১৩ ওভার ৩ বলে সাকিব আউট হলে বাকি ৬ ওভার ৩ বলে বাংলাদেশ রান পায় ৫২।

কিন্তু নাইম, সাকিব ছাড়া কারোরই রান ২০ এর উপরে নেই। হয়তো ম্যাচ জিতে সব ভুলে গেছেন, কিন্তু প্রথম ১০ ওভারে ওমানের ব্যাটিং কৌশল লক্ষ্য করেছিলেন? নতুন একটা দল হিসেবে এই প্লেয়ারগুলোর মধ্যে আহামরি কোন জড়তা, ভয়ে ভয়ে শট্‌ খেলার টেন্ডেসি পেয়েছেন?

আচ্ছা ওমানের বিষয় বাদই দিলাম, স্কটল্যান্ড ১১ ওভার ৩ বলে ৫৩ রানে ৬ উইকেট হারালে সেখান থেকে দলটা ১৭ ওভারে ১০৪ রান তোলে। ১৭ ওভার এক বলে তাদের ৭ম উইকেট পরে।
পরবর্তী ৩ ওভারে দলটা গুরুত্বপূর্ণ ৩৬রান যোগ করে স্কোরবোর্ডে।

অর্থাৎ তারা স্লগ ওভারগুলোতে উইকেট ২টা হারালেও তাদের ব্যাটার'রা ছিল যথেষ্ট আগ্রাসী। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত আপনি কজন আগ্রাসী, কনফিডেন্ড বা আত্মবিশ্বাসী টি-টুয়েন্টি প্লেয়ার দেখেছেন আপনার জীবদ্দশায় বলতে পারবেন?
হলফ করে খুব বেশি প্লেয়ারের তেমন চোখ রাঙ্গানো কোন আগ্রাসী মানসিকতা চোখে ভাসে এ প্রশ্নটা মনে জাগলে?

বাংলাদেশি কাউকে কী দেখেছেন এখন পর্যন্ত একটা লম্বা সময় ধরে বিশেষ করে টি-টুয়েন্টিতে মোটামুটি ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করে যেতে? হ্যাঁ সাকিব, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ্‌, তামিমরা একটা লম্বা সময় ধরে এ দলের পরিপক্কতা অর্জনে সার্ভিস দিয়ে আসছে, কখনো কখনো তাদের আগ্রাসী ব্যাটিংও আমরা দেখেছি।

কিন্তু আপনি এখন যেকোন দলের প্লেয়ারদের ভিতরে যে ভ্যারিয়েশন বা যে বৈচিত্রতা দেখবেন, তাদের বডি ল্যাংগুয়েজ, কনফিডেন্স লেভেল, অ্যাগ্রেশান, সেটা প্রায় ৯০ভাগ ক্ষেত্রেই আপনি বাংলাদেশের প্লেয়ারদের মধ্যে দেখবেন না।
আপনি এখনকার ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান দলের দিকেই একটু লক্ষ্য করুন না, এই এশিয়ার দলগুলোকেই একটু অবজার্ভ করুন না।

তাদের যেকোন নতুন প্লেয়ারও পিচে আসলে তার বডি ল্যাংগুয়েজ, তাদের কনফিডেন্স লেভেল থাকে বেশ পরিপক্ক। এই জিনিসগুলো নোটিস করার জন্য আপনাকে ম্যাগনেফায়িং গ্লাস নিয়ে বসতে হবে না খেলা দেখতে।
আপনি হার্ডিক পান্ডিয়া, কে এল রাহুল, সুরিয়াকুমার যাদব, শিখার ধাওয়ান, পাকিস্তানের বাবর আজম, ফখর জামান, হাসান আলী, আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নাবী, রশিদ খান, যাদ্‌রান, বা যেকোন প্লেয়ারকেই দেখুন।

বোলিং বা ব্যাটিংয়ের সময় এদের কনফিডেন্স, মুভমেন্ট, বডি ল্যাংগুয়েজে একটা পরিপক্কতা দেখা যায়। দূর্ভাগ্যবশত বাংলাদেশের বোলিং লাইন-আপে মোটামুটি সবাই বেশ ভালো কনফিডেন্স নিয়ে খেললেও ব্যাটিংয়ে গেলে কেমন যেনো শটে অ্যাকুরেসি খুঁজে পাওয়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দুষ্কর হয়ে পড়ে।

টাইমিং, ফুট ওয়ার্ক, পাওয়ারফুল শট্‌ কিংবা বোলারের মাইন্ডসেটের সাথে খেলা, বোলারকে অগোছালো করা, সাইকোলজিক্যালি বোলারদের বীট করার মতো পর্যাপ্ত ম্যাচুরিটি এদেশের অধিকাংশ প্লেয়ারের থাকার কথা থাকলেও সময়ের সাথে সাথে সৌম্য, লিটন দাশ, সোহান, সাব্বির, শামীমরা বরং যেনো কেমন ধোঁয়াশায় সময় পার করছে।

গতকাল নাইম, সাকিবদের শটে কিন্তু অ্যাকুরেচি পর্যাপ্ত ছিল না। হ্যাঁ আফিফ, নাইম, সোহান, সাইফুদ্দিন এরা সবাই অনেক সম্ভাবনাময় প্লেয়ার, এবং সবারই বেশ ভালো পোটেনশিয়াল আছে, কিন্তু এদেরকে কবে নাগাদ বাংলাদেশ একেকটা থিংক-ট্যাংক আর কনফিডেন্ট হার্ড-হিটার হিসেবে পাবে যা কিনা প্রতিপক্ষকে সাইকোলজিক্যালি অনেকবেশি পীড়া দিবে তা কেবল সৃষ্টিকর্তাই জানে।

#T20WorldCup #ICCT20WC #Cricket #SportsBlog #Blog #BCB #BangladeshCricket